Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
পিঁপড়ের সংসার ভাঙাই যার জীবিকা
ছবি
ডাউনলোড

পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্য নানা মানুষ নানা ধরনের কাজকে জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়ে থাকে। তেমনি একজন হলেন ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার কালাম হোসেন। তিনি লালশো বা লাল পিঁপড়া ডিম সংগ্রহ করে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের রাজনগর গোরস্থানের পাশে একটা লম্বা বাঁশ ও থলে হাতে এক যুবককে গাছে গাছে তন্নতন্ন করে কিছু একটা খুঁজতে দেখা যায়। কৌতুহলবশতঃ তার কাছে গিয়ে জানা যায়, তার নাম কামাল হোসেন। তিনি লালশো বা লাল পিঁপড়া বাসার খোঁজ করছেন। তবে যেমন তেমন বাসা হলে চলবে না; চাই ডোল পিঁপড়ার বাসা। যেখানে মিলবে প্রচুর পরিমাণে সাদা রঙের ডিম। এই পিঁপড়ার ডিমই যে তার জীবিকা নির্বাহের হাতিয়ার।

·         রংপুরে ৮ লাখ ৭ হাজার ইঁদুর নিধন

কালাম হোসেনের সঙ্গে কথা বলেন নিউজবাংলাদেশের প্রতিনিধি। কামাল জানান, সাধারণত রইনা, মেহগনি, আম, লিচুসহ দেশীয় গাছগুলোতেই ডোল পিঁপড়ার বাসা পাওয়া যায়। লালা ব্যবহার করে গাছের ডালের আগার দিকের চার-পাঁচটা পাতা জোড়া দিয়ে শক্ত বাসা তৈরি করে পিঁপড়ার দল। পরে সেখানে তারা ডিম পাড়ে। বড় বাসা থেকে ১শ থেকে দেড়শ গ্রাম ডিম পাওয়া যায়। আশ্বিন-কার্তিক মাসে দিকে এই ডিমের চাহিদা থাকে বেশি। তবে সব থেকে বেশি ডিম পাওয়া যায় শীতের শেষে দিকে ফাল্গুন মাসে। কিন্তু সেই সময় ডিমের চাহিদা তেমন একটা থাকে না। এই ডিম সংগ্রহ ও সংরক্ষণের কাজটি খুব সতর্কের সাথে করতে হয়। কারণ ডিম আস্ত না রাখলে মাছে খায় না।

কালাম হোসেন জানান, লালশো বা লাল পিঁপড়ার ডিম ৭শ টাকা থেকে শুরু করে ১২শ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হয়ে থাকে। সাধারণ সৌখিন মাছ শিকারীরা তার কাছ থেকে এই ডিম ক্রয় করে থাকেন। এই ডিম মাছেদের খুব প্রিয় খাবার। বরশিতে আটা-ময়দা-পাউরুটি, একানির মতো আদারের সঙ্গে লালশো বা লাল পিঁপড়ার ডিম দেয়া হলে বড় মাছেরা সহজে টোপ গেলে। এইজন্য যারা সৌখিন মাছ শিকারি বা টিকিট কিনে মাছ শিকার করে তাদের কাছে জনপ্রিয় টোপ পিঁপড়ার ডিম। পানির নির্দিষ্ট স্থানে আদার ফেলে মাছ ডেকে আনার জন্য এই ডিমের চাহিদা রয়েছে জেলেদের কাছেও। এই জন্য অনেক সময় জেলেরা তাদের কাছ থেকে ডিম কিনে থাকেন।

কালাম আরো জানান, তিনি গরিব মানুষ। এই কাজে কোন পুঁজি লাগে না। এজন্য তিনি এটাকে জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম হিসাবে বেঁছে নিয়েছেন। সারাদিনে সে এক থেকে দেড় কেজি পর্যন্ত ডিম সংগ্রহ করতে পারেন। আর তাতেই চলে বাবা-মা- স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ে নিয়ে তাদের ৬ জনের সংসার।